ছাগলে ধান খাওয়া কেন্দ্র করে বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যা: অভিযুক্ত ‘রোহিঙ্গা’ করিম




পাঁচ দিন আগের বিরোধে প্রাণ গেল বৃদ্ধ শরিফের; অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে আগেও দুটি হত্যা মামলার তথ্য, পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু


এরফান হোছাইনঃ

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে ক্ষেতের ধান ছাগলে খাওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে মোহাম্মদ শরিফ নামে এক বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। 

রোববার (৩০ নভেম্বর) সাড়ে ১১ টার দিকে রাতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল করিমকে স্থানীয়রা ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যার বিরুদ্ধে আগেও একাধিক হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে।

নিহত মোহাম্মদ শরিফ পিএমখালীর ছনখলা উত্তর নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।


নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত পাঁচ দিন আগে। মোহাম্মদ শরিফের ক্ষেতের ধান খেয়ে ফেলে প্রতিবেশী আব্দুল করিমের পালিত একটি ছাগল। এ সময় শরিফ ছাগলটিকে দুটি বেতের বাড়ি দিয়ে ক্ষেত থেকে তাড়িয়ে দেন। এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাগলের মালিক আব্দুল করিম ক্ষিপ্ত হন এবং শরিফের বিরুদ্ধে বিচার দেন।

শরিফের স্ত্রী শফিকা অভিযোগ করে বলেন, "সেই ক্ষোভ থেকেই রোববার সন্ধ্যায় আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় করিম। এরপর তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।"



গুলিবিদ্ধ শরিফকে গুরুতর অবস্থায় রোববার রাতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্ত্রী শফিকার দাবি, হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকদের অবহেলার কারণেই তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো।


হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের প্রতিবেশী সাইফু জানান, করিম মূলত একজন রোহিঙ্গা। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তাকে দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও ‘খুন-খারাবি’ করিয়ে থাকে।

সাইফু বলেন, "করিম আগেও দুটি হত্যা মামলার আসামি। সে এর আগে খুরুশকুলে একটি টমটম (ইজিবাইক) চালককে জবাই করে হত্যা করেছিল। সুযোগ পেয়ে সে আবারও এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমার বাড়ির পাশেই তার অবস্থান, সকাল-বিকেল তাকে দেখা যেত। এমন একজন অপরাধী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোয় আমরা আতঙ্কিত।"


এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি ইলিয়াস খান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ