🚨 প্রলোভনের অন্ধকার ফাঁদ: টেকনাফের গহীন পাহাড় থেকে নারী-শিশুসহ ২৫ জিম্মি উদ্ধার, আটক ২

 




 উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে গহীন পাহাড়ি এলাকায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল নারী ও শিশুসহ ২৫ জনকে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং নৌবাহিনীর এক সফল যৌথ অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা সম্ভব হয়েছে।

স্বপ্নভঙ্গ ও জিম্মিদশা

উচ্চ বেতনের চাকরি আর অল্প খরচে 'উন্নত জীবন' যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের সংগ্রহ করেছিল এই মানবপাচারকারী চক্র। সাগরপথে বিপজ্জনক মালয়েশিয়া পাচারের আগে তাদের টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জিম্মি করে রাখা হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রার এই লোভনীয় ফাঁদেই পড়েছিলেন তারা।

রুদ্ধশ্বাস যৌথ অভিযান

কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক, এই চাঞ্চল্যকর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত খবর এবং পূর্বে আটককৃত পাচারকারীদের দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী জানা যায়, বাহারছড়ার জুম্মা পাড়া সংলগ্ন গহিন পাহাড়ি এলাকায় একটি গোপন আস্তানায় নারী ও শিশুসহ বহু সংখ্যক ব্যক্তিকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে, সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী একযোগে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। তিন ঘণ্টার এই অভিযানেই পাচারকারীদের গোপন আস্তানাটি খুঁজে বের করা সম্ভব হয়। যৌথ বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি থাকা এই ২৫ জন (নারী ও শিশুসহ) ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।

পাচারকারী চক্রের সদস্যদের পরিণতি

অভিযান চলাকালীনই যৌথ বাহিনী সক্রিয়ভাবে মানবপাচারকারী চক্রের ২ জন সদস্যকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করতে সক্ষম হয়।

কোস্ট গার্ডের এই কর্মকর্তা আরও জানান, উদ্ধারকৃত জিম্মি ও আটককৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এই অভিযান আবারও প্রমাণ করল যে, অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা শুধু ঝুঁকিপূর্ণই নয়, এর আড়ালে লুকিয়ে থাকে নৃশংস মানবপাচারকারী চক্রের অন্ধকার থাবা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ