আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম; গুজবে কান না দিতে সিভিল সার্জনের আহ্বান
এরফান হোছাইন:
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সরকারের দেশব্যাপী বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কক্সবাজারে সাংবাদিকদের নিয়ে এক পরামর্শমূলক (কনসালটেশন) কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই জনস্বাস্থ্য উদ্যোগকে সফল করতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকাকেই প্রধান বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং জেলা তথ্য অফিসের যৌথ আয়োজনে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ আঃ মান্নান। মূল বক্তব্য দেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদুল হক।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: শাহিদুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সজীব ইমরান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মাহবুবর রহমান এবং জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মো: আব্দুছ ছাত্তার সহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
১২ অক্টোবর থেকে বিনামূল্যে টিকা, লক্ষ্য ১৫ বছর বয়সীরা:
কর্মশালায় জানানো হয়, সরকারের উদ্যোগে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় এই টাইফয়েড টিকাদান শুরু হচ্ছে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু-কিশোরকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া। প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরাও এই টিকার আওতায় আসবে।
ডাঃ মোহাম্মদুল হক সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ জানান, "কোনো ধরনের গুজব বা বিভ্রান্তিতে কান দেবেন না। সময়মতো নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সন্তানদের টিকা নিশ্চিত করুন।" তিনি টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশেষ করে শিশু, কিশোর ও নারীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে টাইফয়েড এখনও বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা:
বক্তারা বলেন, টাইফয়েড জ্বর একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ হওয়া সত্ত্বেও এটি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিদ্যমান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, যাদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার বাসিন্দা।
জেলা প্রশাসক মোঃ আঃ মান্নান বলেন, "স্বাস্থ্যসচেতনতা ও সফল টিকাদান কার্যক্রমে পিছিয়ে থাকা কক্সবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমকর্মীরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।"
কর্মশালায় স্থানীয় সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে কার্যকর কৌশল নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

0 মন্তব্যসমূহ