টেকনাফে মানবপাচার চক্রের বড় পরিকল্পনা নস্যাৎ: সাগরপথে আসা ৬ জন আটক

রিপোর্টঃ



'রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কার্ড পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন': বিজিবির অভিযানে আটক সবাই ক্যাম্পের বাসিন্দা; অব্যাহত 'জিরো টলারেন্স' নীতি

ডেস্ক রিপোর্টঃ

কক্সবাজারের টেকনাফে মানবপাচার চক্রের একটি বড় ধরনের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মিয়ানমার থেকে সাগরপথে পাচার করে আনা বিদেশি নাগরিকদের (সম্ভবত রোহিঙ্গা) ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে ছয় সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি। আটককৃতদের মধ্যে বাড়ির মালিকও রয়েছেন।

শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় এই বিশেষ অভিযান চালানো হয়।

আশ্রয়দানকারীসহ আটক ৬, সবাই ক্যাম্পের বাসিন্দা

বিজিবি জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সাগরপথে পাচার করে আনা কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে স্থানীয় একটি বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। অভিযানকালে বাড়ির মালিক মোছা. শামসুন্নাহার (৩৫) সহ ছয়জন পাচারকারীকে আটক করা হয়। যদিও এ সময় পাচারচক্রের আরও দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আটককৃতরা হলেন: শামসুন্নাহার (৩৫), হোসনে আরা (৩১), নুরুন্নিসা (৪৯), মোহাম্মদ ইসমাইল (৫০), হারুন (৩৫) ও ইউসুফ আলী (৪৭)। বিজিবি নিশ্চিত করেছে, এদের সকলে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। এটি ইঙ্গিত দেয় যে পাচারকারী চক্রগুলো ক্যাম্প এলাকাকে তাদের নেটওয়ার্কের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

টাকার বিনিময়ে আশ্রয় ও কার্ড পাইয়ে দেওয়ার স্বীকারোক্তি

বিজিবি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির মালিক শামসুন্নাহার টাকার বিনিময়ে পাচার করে আনা লোকজনকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। আটক অন্যান্য সদস্যরাও স্বীকার করেছেন যে, তারা শুধু মিয়ানমার থেকে লোক এনে ক্যাম্পে নেওয়ার কাজই করতেন না, বরং অর্থের বিনিময়ে ওইসব ব্যক্তিকে ক্যাম্পের কার্ড (পরিচয়পত্র) পেতেও সহায়তা করতেন

লে. কর্নেল আশিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, "মাদক ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে বিজিবির 'জিরো টলারেন্স' নীতি কঠোরভাবে অব্যাহত থাকবে। দেশের নিরাপত্তা ও সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক।"

আটককৃতদের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া পাচারকারীদের ধরতে বিজিবির অভিযান চলছে। গত কয়েক মাসে কক্সবাজারের এই উপকূলীয় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবপাচার রোধে একাধিক অভিযান চালিয়ে বহু ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ