মহেশখালীতে দুঃসাহসিক ঘটনা: পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ, বিএনপি নেতা কর্তৃক হাতকড়া ফেরত দিলেও আসামি পলাতক; ঘটনা অস্বীকার পুলিশের
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের মহেশখালীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও মাতারবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ কাইয়ুমকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে মাতারবাড়ী নতুন বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দাবি, কাইয়ুমের অনুসারী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের প্রায় ১০-২০ জন সদস্য পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়।
জানা যায়, বিএনপির দলীয় অফিস ভাঙচুর ও বিস্ফোরক মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কাইয়ুমকে গ্রেপ্তারে এসআই হারুনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার অনুসারীরা একত্রিত হয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এই সুযোগে হামলাকারীরা হাতকড়াসহ কাইয়ুমকে ছিনিয়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে মহেশখালী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আক্রান্ত সদস্যদের উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই এই আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হাতকড়া উদ্ধার, আসামি ছিনতাই নিয়ে পুলিশের দ্বিমতঃ
এদিকে, ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহেশখালী থানা পুলিশ অভিযান শুরু করে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও বিএনপি নেতার (ফিরোজ) মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়া হাতকড়াটি পরবর্তীতে পুলিশকে ফেরত দেওয়া হলেও কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ব্যর্থ হয়।
মাতারবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুমিত বড়ুয়া জানান, ঘটনাটি ঘটে রাত ৮টার দিকে। তিনি পরে জানতে পারেন, আসামিকে ছিনিয়ে নিতে একদল লোক ফুলকলির সামনে সিএনজি আটকায় এবং পুলিশের ওপর হামলা করে। তবে তিনি দাবি করেন, কাইয়ুমের হাতে হাতকড়া ছিল না। তিনি আরও জানান, রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার দলের দুই সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ এবং কাইয়ুমসহ অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কায় সত্য গোপন, দাবি স্থানীয়দেরঃ
যদিও মাতারবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হাতকড়া ছিনতাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন, কিন্তু স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সহ অনেকেই দাবি করছেন, পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। তাদের ধারণা, পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে মনে করে পুলিশ কাছ থেকে আসামি ছিনতাইয়ের বিষয়টি জনসম্মুখে না এনে এড়িয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন শাহীন জানান, তিনি শুনেছেন যে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে সংঘবদ্ধ হয়ে একদল লোক ছিনিয়ে নিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেন, এ ঘটনা তদন্তাধীন এবং খবর নিয়ে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


0 মন্তব্যসমূহ