কক্সবাজার সদর থানায় ঢুকে ‘দাদাগিরি’: আলোচিত চাঁদাবাজ সোহেল আটক

 



নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদর থানায় প্রবেশ করে পুলিশকে হুমকি দেওয়াসহ একাধিক গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অবশেষে আটক হয়েছেন আলোচিত মো. সোহেল গিয়াস (২৪)। দীর্ঘদিন ধরে কলাতলী ও সুগন্ধা এলাকায় চাঁদাবাজি ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম রাখার অভিযোগ ছিল এই যুবকের বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্র এবং স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, আটক সোহেল গিয়াস সদর থানাধীন কলাতলী এলাকার মো. হানিফের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও নারী নির্যাতনের মতো গুরুতর ধারায় ইতোপূর্বে অন্তত দুটি মামলাসহ মোট চারটি মামলা রয়েছে।

থানায় ঢুকে ‘দাদাগিরি’ ও আটক:

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোহেল সম্প্রতি থানায় প্রবেশ করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হুমকি দেন এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা দায়ের করেছে।

এছাড়াও, সম্প্রতি ডিসি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে কক্সবাজার রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে পুলিশ অ্যাসল্ট (পুলিশের ওপর হামলা) ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা রয়েছে। নতুন দুটি মামলাসহ আগের দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ত্রাসের রাজত্ব ও চাঁদাবাজির অভিযোগ:

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আটক সোহেল দীর্ঘদিন ধরে কলাতলী এবং সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলেন। তার চাঁদাবাজিতে কলাতলীর ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ ছিলেন।

আলোচিত এই যুবকের বিরুদ্ধে জনশ্রুতি রয়েছে যে, তিনি শুধু চাঁদাবাজই নন, তার স্বভাব-চরিত্রও ভালো ছিল না। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ সেপ্টেম্বর কামরুল হাসান নামে এক ব্যক্তির উপর হামলার অভিযোগও উঠেছিল এই সোহেলের বিরুদ্ধে।

প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে উচ্ছেদ ঠেকানোর অভিযোগ:

সোহেলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগটি হলো সরকারি স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা দেওয়া। জানা যায়, তিনি সুগন্ধা পয়েন্টে রাতের আঁধারে বালিয়াড়ি দখল করে প্রায় ৫০টিরও বেশি দোকান বসানোর নেতৃত্ব দেন

যখন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট আজিম খান এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি-সহ একটি দল অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে যান, তখন এই আলোচিত সোহেল তার দলবল নিয়ে প্রশাসনকে বাধা দেন এবং নানা ধরনের হুমকি দেন। ফলস্বরূপ, সে সময় প্রশাসন উচ্ছেদ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়।

ওসি ইলিয়াস খান আরও জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এই আটকের ফলে কলাতলী ও সুগন্ধা এলাকার সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

(মামলার বিবরণীর সংক্ষিপ্ত তালিকা):

মামলা নং/তারিখঅপরাধের ধারাবিবরণ
এফআইআর নং-২৮ (১৪ নভেম্বর, ২০২২)১০৯/১১৪/৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০হত্যা (৩০২) ও অন্যান্য
এফআইআর নং-৩২ (১৭ জুলাই, ২০২৫)৭/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০নারী ও শিশু নির্যাতন
নতুন মামলা ধারা উল্লেখ নেইথানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি
নতুন মামলা ধারা উল্লেখ নেইডিসি ফুটবল টুর্নামেন্টে পুলিশ অ্যাসল্ট

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ