রোহিঙ্গা, পানি ও বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশকে ৩৬২৯ কোটি টাকা দিচ্ছে এডিবি






নিজস্ব প্রতিবেদনঃ

বাংলাদেশের তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহায়তা প্রদানের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) মোট ২৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ঋণ ও অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। এই অর্থ খুলনার সুপেয় পানি সরবরাহ, উত্তর-পশ্চিমের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।


সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং নিজ নিজ পক্ষে এই সংক্রান্ত আর্থিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।



খুলনায় জলবায়ু-সহনশীল পানি ব্যবস্থায় ১৫ কোটি ডলারঃ


খুলনা শহরের সুবিধাবঞ্চিত বাসিন্দাদের কাছে নিরাপদ ও টেকসই সুপেয় পানি পৌঁছে দিতে এডিবি এই খাতে ১৫ কোটি ডলার ঋণ এবং এর সঙ্গে ৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান  দিচ্ছে। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং জানান, এই উদ্যোগটি খুলনা শহরের পানি ব্যবস্থাকে জলবায়ু-সহনশীল করে তুলবে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির লবণাক্ততা সমস্যা মোকাবিলা করবে।


তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৭.৮ মিলিয়ন মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বিশেষত, এতে স্মার্ট জল সরবরাহ ব্যবস্থাপনার মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যা ২০৫০ সাল পর্যন্ত পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।



উত্তরবঙ্গে স্মার্ট গ্রিড ও দুর্যোগ প্রস্তুতিঃ


রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ নিয়ে গঠিত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মান, দক্ষতা এবং নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে এডিবি ৯ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ বিতরণ নেটওয়ার্কে উন্নত স্মার্ট প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে।


এডিবির এই উদ্যোগের মাধ্যমে দূরবর্তী নদী তীরবর্তী দ্বীপগুলোতে বসবাসকারী নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বিদ্যুৎ-ভিত্তিক নতুন জীবিকার সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া, দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌর ব্যাকআপ সিস্টেমও স্থাপন করা হবে।


রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য অনুদানঃ

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় সম্প্রদায়কে সহায়তার জন্য এডিবি ৫ কোটি ৮৬ লাখ ডলার অনুদান দেবে। এই অর্থ মূলত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয়দের মধ্যে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।


এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর জানান, ২০১৮ সাল থেকে এডিবি এই খাতে সহায়তা দিয়ে আসছে এবং এই নতুন অনুদান জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রকল্পের কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ