রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিতে জনপ্রতিনিধি-পুলিশের যোগসাজশ, দুদকের অভিযোগপত্র

 


চট্টগ্রাম অফিসঃ

রোহিঙ্গা নারী নুরুন্নাহার বেগম। যিনি বাংলাদেশি পরিচয়ে ইয়াসমিন আক্তার নামে পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেছিলেন। তার এই কাজে সহায়তা করেছিলেন খোদ জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সদস্য। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে। এ ঘটনায় সাবেক দুই কাউন্সিলর, এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক স্থানীয় বাসিন্দাসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুদক।

বুধবার (২০ আগস্ট) জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নাগরিক নুরুন্নাহার বেগম ২০১৭ সালের ৭ জুন কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। এতে তিনি তার বাবা ও মায়ের ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করেন। তার নাগরিকত্ব ও জাতীয় পরিচয়পত্র সত্যায়িত করেছেন তৎকালীন ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ রফিকুল ইসলাম। এছাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বাদশা নামের এক ব্যক্তি তাকে নিজের বোন পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তা সনদ পেতে সহযোগিতা করেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, ইয়াসমিন আক্তারের পক্ষে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এএসআই সাজেদুর রহমান।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় ২০২১ সালের ২৫ মার্চ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অপর দুই আসামি, ডিএসবি’র সাবেক পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধর এবং সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার নোবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।

দুদকের আইনজীবী আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হবে।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাচারের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এই চক্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার অসাধু ব্যক্তিরা জড়িত। তারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দিচ্ছে, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে দুদক কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ