কক্সবাজারের মহেশখালীতে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা: যুবকের মৃত্যুদণ্ড

 



এরফান হোছাইন:
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ছয় বছর বয়সী মাহিয়া নামে  এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মোহাম্মদ সোলেমান নামের এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে হত্যার পর মরদেহ গুম করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ ওসমান গণির আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কেক ও চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে অপহরণ করে সোলেমান। এরপর তাকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। শুধু তাই নয়, হত্যার পর শিশুটির মরদেহ গুম করে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সে।
শিশুটির নিখোঁজের পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করলে মুক্তিপণের জন্য করা ফোন কলের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ মোহাম্মদ সোলেমান ও তার স্ত্রীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সোলেমানের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলেও তার স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মীর মোশাররফ হোসেন টিটু জানান, আদালত আসামিকে বিভিন্ন ধারায় একাধিক সাজা দিয়েছেন। শিশু আইন ২০০০ এর ৭ ধারায় যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৮ ধারায় যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, এবং দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, শিশু আইনের ৯ (২) ধারায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সবগুলো সাজা পর্যায়ক্রমে কার্যকর হবে।
আইনজীবী বলেন, "আদালত তার রায়ে উল্লেখ করেছেন যে, এই ধরনের নৃশংস অপরাধের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হতে পারে। এই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড না দিলে সে ভবিষ্যতে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।" তিনি আরও জানান, সোলেমান এর আগেও তার স্ত্রীকে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিহত শিশুর বাবা আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, তার মেয়ের ওপর চালানো নৃশংসতার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তিনি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ