পেকুয়ায় গভীর রাতে সাংবাদিক পরিবারের জমি দখল করে ঘর নির্মাণ, থানায় মামলা

 


কক্সবাজারে পেকুয়ায় সাংবাদিক পরিবারের বহু বছরের ভোগ দখলীয় জমি দখল করে  অবৈধভাবে রাতের বেলায় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


রবিবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টায় ঘটনাটি ঘটেছে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাতব্বরপাড়া এলাকায়। 

ভুক্তভোগীরা হলেন- মৃত রমিজ আহমেদে পুত্র একটি জাতীয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক রিদুয়ানুল হক, ঢাকা চ্যানেল আইয়ে কর্মরত এনামুল হক ও কানাডা প্রবাসী  সাংবাদিক জিয়াউল হক।


এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে পেকুয়ায় থানায় একটি মামলা রুজু করেন।  মামলায় আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।  মামলা নম্বর ১৭/১৮ আগস্ট-২৫। 


মামলার আসামিরা হলেন, পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল কাশেমের পুত্র আবুল কালাম বাহাদুর (৫০), একই গ্রামের  মৃত বশত আলীর পুত্র রবিউল আলম (৪৫), মৃত বশত আলীর পুত্র মোহাম্মদ রফিক (৫২), মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র  বদিউল আলম (৫৫) ও মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র সিদ্দিক আহমেদ (৫০)। 


এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদী রফিকুল ইসলাম গংদের বহু বছরের দখলীয় জমি গত (১৭ আগস্ট) রবিবার দিবাগত রাতে দা-চুরি ইত্যাদি নিয়ে বিবাদীরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ১৩৫০ নম্বর  খতিয়ানের ৩৮৭ দাগের ৪০ শতক জমি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক জমির চারপাশে জালের ঘেরাও দিয়ে ঘর নির্মাণ করে অবৈধভাবে দখল করে নেন।  এই জমির ব্যাপারে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং কক্সবাজারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমআর মামলাও চলমান রয়েছে। বিবাদীদের ১৩৫০ দাগের মধ্যে কোন জমি নেই। 


স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. নুরল আলম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে কোন পক্ষ আমাকে অভিযোগ করেনি। 


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল কালাম বাহাদুর বলেন, এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। জমিতে অনেক ওয়ারিশ রয়েছে।  তবে তিনি বাদীর অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন দাবি করেন। 


এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে পেকুয়া থানার উপ-পরিদর্শক উগ্যজাই মারমা ঘটনাস্থল পরিবেশন করেন।  তিনি পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান।  পরে জবর দখলকারীদের বিরুদ্ধে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা রুজু করেন।


পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, রাতের বেলায় রাজাখালীতে জোর পূর্বক ঘেরাও দিয়ে ঘর নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।  পরে থানায় মামলা রুজু হয়। 


উল্লেখ্য, উক্ত জমি খাজনা অনাদায়ের কারণে ১৯৫৮ সালে সরকার নিলাম ঘোষণা করেন। সেই আলোকে ১৯৬০ সালে ৩৮ নং মানিজারী মোকদ্দমার ডিক্রি মূলে কক্সবাজার মুন্সেফ আদালত থেকে ছিদ্দিক আহমদ উক্ত জমি নিলাম খরিদ ক্রয় করেন। নিলাম খরিদ্দার ছিদ্দিক আহমদ উক্ত জমি ১৯৭০ সালে টাকার প্রয়োজনে বাদীর পিতা রমিজ আহমদকে বিক্রি করে দখল হস্তান্তর করেন। খরিদ মালিক রমিজ আহমদের নাম লিপি করাইয়া দেন এবং তা বি.এস ১৩৫০ নং খতিয়ান ভুক্ত হয়। রমিজ আহমদ আহমেদের মৃত্যু ঘটলে তার সন্তানরা ওয়ারিশ সূত্রে এই জমির মালিকানা পায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ