রামুতে একই রাতে দুই বাড়িতে ডাকাতি

 


রামুর রশিদ নগরে একই রাতে দুই বাড়িতে ডাকাতি: ১৫-২০ জনের সশস্ত্র দলের তাণ্ডব, স্বর্ণালঙ্কার-মোটরসাইকেলসহ ৩ গরু লুট

হামির পাড়া গ্রামে আতঙ্কের রাত; সিসিটিভি ভাঙচুর করে ডিভিআর নিয়ে গেছে ডাকাতরা, পুলিশি অভিযান জোরদারের দাবি

কক্সবাজার, ৪ জুলাই ২০২৫: কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের হামির পাড়া গ্রামে একই রাতে দুটি বসতবাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আনুমানিক রাত ৩টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল এই তাণ্ডব চালায়। এতে স্বর্ণালঙ্কার, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা এবং তিনটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রথমে ৫নং ওয়ার্ডের হামির পাড়া গ্রামের মরহুম ফরিদ আহমদের পুত্র মো. সরওয়ারের বাড়ি থেকে তিনটি গরু লুট করে ডাকাতদল। এরপর পাশের মো. সিরাজের পুত্র মো. রুবেলের বাড়িতে হানা দেয় তারা। মো. রুবেলের স্ত্রী জানান, রাতে তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। তিনি শিশু সন্তানদের নিয়ে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন এবং অন্য কক্ষে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ী ছিলেন। হঠাৎ জানালা দিয়ে টর্চের আলো ও ডাকাডাকিতে তার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে জেগেই তিনি দেখতে পান, জানালা দিয়ে ৩-৪ জন বন্দুকধারী তার দিকে বন্দুক তাক করে দরজা খুলতে বাধ্য করছে।

ঘরে ঢুকেই ডাকাতরা রুবেলের স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার পরিহিত স্বর্ণালঙ্কারসহ আলমারিতে থাকা নগদ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন এবং নতুন জামাকাপড় একে একে লুট করে নেয়। ডাকাতির সময় ডাকাতরা ঘরের ভিতরে এবং বাহিরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভাঙচুর করে এবং ডিভিআর মেশিন খুলে নিয়ে যায়, যা তাদের সুপরিকল্পিত অপরাধের ইঙ্গিত দেয়।

ডাকাতির খবর পেয়ে রামু থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান বলেন, "আমরা ডাকাতদলের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।" রশিদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মাসুম জানান, তিনি ডাকাতির ঘটনা শুনেছেন, খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং গরু উদ্ধারে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।

স্থানীয় আব্দুর রশিদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে ডাকাতির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতা বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার।" রশিদ নগর যুবদল নেতা মো. দিদার বলেন, "এ ধরনের অপকর্ম প্রতিরোধে পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।" এক রাতে দুটি বাড়িতে ডাকাতির এই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে এবং তারা দ্রুত ডাকাতদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ