কক্সবাজারে জমি বিরোধের জেরে বিএনপি নেতা রহিম নিহত

 




কক্সবাজারে জমি বিরোধের জেরে বিএনপি নেতা রহিম নিহত: অভিযুক্ত ব্যক্তি জামায়াত নেতা নয় বলে অস্বীকার আমীরের

//ব্যক্তিগত ঘটনায় 'রাজনৈতিক রঙ' না দেওয়ার আহ্বান জামায়াতের

কক্সবাজার, ১৫ জুলাই ২০২৫:
এরফান হোছাইন,  কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলায় গুরুতর আহত বিএনপি নেতা রহিম উদ্দিন সিকদার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। 
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের এভার কেয়ার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, কারণ হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে, যদিও জামায়াত সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিহত রহিম উদ্দিন সিকদারের ভাই শফিকুর রহমান জানান, গত রবিবার রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার আপন ভাইদের মারধর করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় ফাতের ঘোনা ইউনিট জামায়াতের সভাপতি আব্দুল আল নোমান, জামাই মিজান, মুজিব এবং এনামসহ কয়েকজন এই হামলায় জড়িত ছিল। হামলার পর মুমূর্ষু অবস্থায় আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে রহিম সিকদারের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রহিম সিকদার কক্সবাজার সদর উপজেলার আওতাধীন ভারুয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তার মৃত্যুর পর কক্সবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আহমেদ উজ্জ্বল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, "ফাতেরঘোনা ইউনিট জামায়াতে ইসলামী সভাপতির হাতে ভারুয়াখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন সিকদার নিহত হয়েছে।" এই অভিযোগের মধ্য দিয়ে ঘটনার রাজনৈতিক দিকটি সামনে আসে।

তবে অভিযুক্তকে জামায়াত নেতা হিসেবে দাবীর প্রেক্ষিতে কক্সবাজার সদর উপজেলা জামায়াতের আমির খোরশেদ আলম দ্ব্যর্থহীনভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, আব্দুল আল নোমান নামের কেউ সদর উপজেলার কোনো ইউনিটে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত নন। খোরশেদ আলম বলেন, "এটি মসজিদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ। রাজনৈতিক কোনো বিরোধ থেকে হামলার ঘটনা ঘটেনি। হামলাকারী যদি জামায়াতের হয়েও থাকে, সে সেখানে মুসল্লি হিসেবে গেছে, জামায়াতের কেউ হিসেবে যায়নি।" তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বলেন, "একটা স্থানীয় জমি বিরোধের ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ মেশানো উচিৎ নয়।"

এদিকে, ছাত্রসমন্বয়ক রিয়াদ মনি মন্তব্য করেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, "সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। অন্যথায় দল বিক্রি করে অনেকেই এভাবে দলের ক্ষতি করতে পারে এবং সে সাথে দলীয় কোন্দল বাড়তেই পারে।"

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, উক্ত ঘটনায় এখনও কোন এজেহার পায়নি।   ইতিমধ্যে উক্ত ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছি। এজেহার পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে পুলিশ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ