মহেশখালীতে পোল্ট্রি ফার্মের গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতি: গুলি ছুড়ে আতঙ্ক, আহত ৩, এলাকায় চরম উত্তেজনা
চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব; চাঁদা না পেয়ে মারধর, মুরগি লুট, দোকানে হামলার পর পুলিশকে খবর দেওয়ায় ফের হামলা ও গুলিবর্ষণ
কক্সবাজার, ১৮ জুলাই ২০২৫: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরাঘোনা এলাকায় পোল্ট্রি ফার্মের মুরগিবোঝাই একটি গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই সময় সন্ত্রাসীরা তিন রাউন্ড গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং গাড়ির চালক ও কর্মীসহ তিনজনকে আহত করে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ২০ মিনিটে মৃত মোস্তাক আহমদের বাড়ির সামনে পোল্ট্রি ফার্মের মুরগি ভর্তি গাড়িটি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে এই ডাকাতি সংঘটিত হয়। অভিযোগ উঠেছে, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও হত্যা মামলার আসামি মো. জাবেদ খান, রেজাউল করিম, দিদারুল আলম বাদশা, নেজাম খাঁন ওরফে কালু ডাকাত, ফয়সাল এবং রাহমত উল্লাহ এই ডাকাতিতে জড়িত। তারা চালক আব্দু শুক্কুর, হেলপার নছর উল্লাহ ও কর্মী শহীদুল্লাহর কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের বেধড়ক মারধর করে আহত করা হয়। এরপর সন্ত্রাসীরা তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৫ হাজার ৭২০ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং গাড়িতে থাকা আনুমানিক ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মুরগি লুট করে নিয়ে যায়।
ডাকাতির ঘটনার পরদিন, ১৯ জুলাই বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে, একই সন্ত্রাসীরা আল আমিন পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিড সেন্টার নামে একটি দোকানে গিয়ে দোকানের মালিক মো. রেজাউল করিম ও তার পরিবারকে খুন, গুম, অপহরণ এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। তারা দোকান লুটের চেষ্টা চালায় এবং ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় দোকান মালিক '৯৯৯'-এ কল করলে মহেশখালী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ নয়। রাত ৮টার দিকে সন্ত্রাসীরা আবারও হামলা চালিয়ে কালু ও সিরাজুল মোস্তফাকে আহত করে এবং হুমকি দেয় যে, কেন তাদের ডাকাতি ও চাঁদাবাজির খবর পুলিশকে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ রাত ৯টা ১৫ মিনিটে স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা পূর্ব ফকিরাঘোনা এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে ৩ থেকে ৪ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বিষয়টি ভুক্তভোগীরা মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মঞ্জুরুল হককে অবহিত করলে পুলিশ আবারও ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের আগমনের খবরে সন্ত্রাসীরা ফের পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীরা প্রায়শই এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে পূর্ব ফকিরাঘোনা এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং স্থানীয়রা যেকোনো সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশের আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
0 মন্তব্যসমূহ