উখিয়ায় একসঙ্গে জন্ম চার শিশুর, দু'দিনেই নিভে গেল সব আলো

 

উখিয়ায় একসঙ্গে জন্ম চার শিশুর, দু'দিনেই নিভে গেল সব আলো


প্রবাসী রবিউল আলমের পরিবারে শোকের ছায়া, হৃদয়বিদারক ঘটনা মোছারখোলায়

নিজস্ব প্রতিবেদন: কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের মোছারখোলা এলাকার প্রবাসী রবিউল আলমের ঘরে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকই জন্মের মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে মারা গেছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে চার শিশুর আগমনে পরিবারে যে আনন্দের ঢেউ উঠেছিল, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভোররাতে তা শোকের সাগরে পরিণত হয়। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় পরিবারজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রবিউল আলমের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার তিন ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. আরিফা মেহের রুমী এবং ডা. মোসাম্মৎ রোকসানা আক্তার এই অস্ত্রোপচারটি পরিচালনা করেন।

নবজাতকদের সুস্থতার জন্য মা ও চার শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু বুধবার সকালে প্রথম নবজাতকটির মৃত্যু হয়। এরপর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই পরদিন বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভোররাত ও সকালে একে একে বাকি তিন শিশুও মারা যায়।

চারটি প্রাণের এমন আকস্মিক প্রস্থানে পরিবারটি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। নিহতদের একজন আত্মীয় আবুল ফয়সাল ফাহিম জানান, "একসঙ্গে চারটি প্রাণের আগমন আমাদের পরিবারের জন্য ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু সেই আনন্দটা বেশি সময় টিকল না। আমরা সবাই ভীষণ শোকাহত।"

নবজাতকদের পিতা প্রবাসী রবিউল আলম তার বেদনাহত অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, "একজন পিতার জীবনে সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ছিল যখন জানতে পারি আমার স্ত্রী চার সন্তানের মা হতে যাচ্ছে। সেই খবর আমাকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—যে আনন্দ একসঙ্গে এসেছিল, তা মাত্র দুই দিনেই চিরতরে থেমে গেল।"

বর্তমানে মা ইয়াছমিন আক্তার ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের অকাল মৃত্যুতে উখিয়ার মোছারখোলা এলাকাসহ পুরো কক্সবাজারে শোক ও বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা পরিবারটির প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ