চট্টগ্রাম অফিসঃ
কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রবিন্দু সুগন্ধা পয়েন্টের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি দখলের চেষ্টায় একটি নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এই বিশাল সম্পত্তির জালিয়াতির মূলহোতা হিসেবে সদর ভূমি অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মোঃ আয়াজের নাম জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এই আয়াজ একটি প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ চক্রকে ব্যাকডেটসহ বিভিন্ন জাল দলিল ও কাগজপত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রামু উপজেলার বাসিন্দা মোঃ আয়াজ সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের হাত ধরেই চাকরি পান। স্থানীয়দের অভিযোগ, পেছারদ্বীপসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার জমি নামেমাত্র মূল্যে ক্রয় এবং জোরপূর্বক দখলের পেছনে এই আয়াজের 'মাস্টারমাইন্ড' পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু তাই নয়, আয়াজের এক ভাই পেছারদ্বীপের ত্রাস হিসেবে পরিচিত এবং এই দুই ভাই মিলে দীর্ঘদিন ধরে নকল নথি ও দলিল তৈরির মাধ্যমে ভূমি দখলের কারবার চালিয়ে আসছে, যা এলাকায় নতুন কোনো ঘটনা নয়।
সুগন্ধার এই ৩০০ কোটি টাকার সরকারি জমি দখলের ক্ষেত্রেও আয়াজের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন স্থানীয়রা। ভূমি অফিসের কম্পিউটার অপারেটর হওয়ায় তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সিস্টেমে প্রবেশের সুযোগ থাকা অস্বাভাবিক নয়। অভিযোগ উঠেছে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই তিনি জাল কাগজপত্র তৈরি করে একটি শক্তিশালী সিন্ডिकेटকে সরকারি জমি দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নে সহায়তা করছেন।
এই কম্পিউটার অপারেটরের ক্ষমতার উৎস এবং ভূমি অফিসের অভ্যন্তরে তার সহযোগীদের পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একটি সাধারণ কম্পিউটার অপারেটরের পক্ষে কীভাবে এত বড় জালিয়াতির সাহস এবং সক্ষমতা অর্জন সম্ভব, তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এই ঘটনায় ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশ আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।
উল্লেখ্য, সুগন্ধা পয়েন্টের এই মূল্যবান সরকারি জমি দখলের ঘটনায় ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের কঠোর হুঁশিয়ারি এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) আইনি পদক্ষেপের খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে, জালিয়াতির মূল কারিগর এই কম্পিউটার অপারেটর আয়াজ এবং তার সহযোগীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না গেলে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এই ভূমি দস্যুতা চক্রের মূলোৎপাটনে প্রশাসনের আরও গভীর তদন্ত এবং কঠোর পদক্ষেপ সময়ের দাবি।
0 মন্তব্যসমূহ